ভোর সকালের মিষ্টি হাওয়া মনকে যেমন স্নিগ্ধ করে তোলে, টকটকে লাল-হলুদ ফুলের বাগানে হাটতে যেমন ভালো লাগে, বর্ষায় বৃষ্টিতে ভীজতে যেমন ভালো লাগে, রাতে চাঁদের জোৎস্নায় জোঁনাকিদের খেলা দেখতে যেমন ভালো লাগে, প্রিয়তমের প্রথম চিঠি পড়তে যেমন ভালো লাগে, ঠিক তেমনি করেই ভালো লেগেছিলো যেদিন শুনেছিলাম চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই)-এর বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠান! আরো বেশি আনন্দে আবেগে উতলা হয়েছিলাম সেদিন, যেদিন সিআরআই বাংলা বিভাগের এখনকার পরিচালক মাদাম ইউ কোয়াং ইউয়ে (আনন্দী) এবং বাংলা বিভাগের সাবেক বিদেশী ভাষা বিশেষজ্ঞ মহিউদ্দিন তাহের ভাই তাদের মিষ্টি কন্ঠে আমার লেখা প্রথম চিঠি পড়ে শুনিয়েছিলেন চিঠিপত্রের আসরে! এ শুধু এপার থেকে লেখা আর ওপার থেকে শোনানো নয়। এ যেন হৃদয়ের গভীরে স্থান দেওয়া, একটি বন্ধুত্বের বন্ধন গড়ে ওঠা। শুধুই রেডিও থেকে জানা শোনা নয়, একজন শ্রোতা তার পথ চলার দূর্গ তৈরী করতে পারে এর মাধ্যমে। ছোটবেলা থেকেই আমি রেডিও শুনতে এবং ছবি আঁকতে বেশি ভালোবাসতাম। ঢাকায় আমাদের বাড়ীতে রেডিও এবং টেলিভিশন দুটোই ছিলো কিন্তু আমার বাবাকে দেখতাম রেডিও শুনতে বেশি ভালোবাসতেন। আমার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে রেডিওতে গান ও নাটিকা বেশি শুনতেন এবং গানের কলি ও শিল্পীর নাম খাতায় লিখে রাখতেন যত্ন করে। একদিন ভাইয়া আমাকে বললেন রেডিওতে গান শুনে গানের কলি ও শিল্পীর নাম লিখে রাখতে। সেই থেকেই আমার মনোযোগ দিয়ে রেডিও শোনা এবং লেখালেখি শুরু। এছাড়াও বছর শেষে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে যখন ঢাকা থেকে রাজবাড়ী অর্থাৎ গ্রামের বাড়ীতে আমরা বেড়াতে যেতাম তখন আমার ছোট খালামনিকে দেখতাম রেডিও শুনতেন এবং রেডিওতে লেখা পাঠাতেন। সে আমার চেয়ে বয়সে সামান্য একটু বড় হওয়ায় তার দেখাদেখি আমি রেডিও শোনায় আরোও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠি। আমি বাংলাদেশ বেতার সহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বেতার নিয়মিত শুনতাম এবং চিঠি লিখতাম। আর তাছাড়া আমি যখন
তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি
তখন থেকেই আমি
বাংলাদেশ বেতার ঢাকা কেন্দ্রে ছোট
শিশুদের অংশগ্রহণে সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করতাম। ফলে
সেই ছোট
বেলা থেকে বেতারের সাথে আমার আত্নার সম্পর্ক গড়ে
উঠে।
নদীর ঢেউ যেমন অবলীলায় বয়ে চলে তেমনি আমার সোনালী দিনগুলি হাসি খুশিতে বেশ কাটছিল। হঠাৎ একদিন একটি ফোনের মাধ্যমে আমি চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই)-এর অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি। সিআরআই-এর অনুষ্ঠানেও যে চিঠি লেখা যায় এবং তারাও যে ডাকে শ্রোতাদের কাছে চিঠি পাঠায় সেটা আমার জানা ছিলোনা! এরপর তার কাছ থেকে সময়সূচি জেনে সিআরআই-এর বাংলা অনুষ্ঠান শুনতে শুরু করি। আর প্রতিদিন অনুষ্ঠান শুনে আমি বহু চিঠি লিখি। চিঠির পাশাপাশি মাঝে মধ্যে কবিতা ও ছোটদের জন্য গল্প লিখে পাঠাতাম। প্রত্যেক সপ্তাহে কখনো ১০টি, কখনো ৭টি, কখনো ৫টি, কখনো ১৫টি করে চিঠি পাঠাতাম পোস্ট অফিসে গিয়ে। অন্যান্য শ্রোতাদের মতো আমিও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের উপহার পেয়েছি সিআরআই বাংলা বিভাগ থেকে। সর্বপ্রথম সিআরআই বাংলা বিভাগ থেকে একটি বড় খামের প্যাকেট যেদিন আমাদের বাসার ঠিকানায় ডাকপিয়ন নিয়ে আসলেন, সেদিন ডাকপিয়ন থেকে শুরু করে আশেপাশের লোকজন এবং আমাদের বাসার সবাই আমরা খুবই অবাক হয়েছিলাম যে সূদুর চীন থেকে উপহার এসেছে! আমিতো বিস্ময়ে, আবেগে, আনন্দে উৎফুল্লে হাতে প্যাকেটটি নিয়ে লাফাচ্ছিলাম আর বলছিলাম চীনের রেডিও থেকে আমার উপহার এসেছে। প্যাকেটের ভেতরে ছিলো বেশ কিছু সময়সূচি, চীনের ঐতিহ্যময় দৃশ্যের অনেকগুলো ভিউকার্ড, ম্যাগাজিন, লাল রঙের পেপার কার্টিং, বুকমার্ক সহ আরো অনেক কিছু। এরপর থেকেই প্রত্যেক মাসেই আমার নামে সিআরআই থেকে নানা ধরণের উপহার আসতো।
যাই হোক ২০০৫ সালের শুরুর দিকের কথা। সিআরআই-কে কেন্দ্র করে আমার জীবনে প্রথমবারেরমত ঢাকার বাড়ীধারায় চীনা দূতাবাসে যাওয়ার সৌভাগ্য এসে যায়। দূতাবাসের সাংস্কৃতিক বিভাগের ফাস্ট সেক্রেটারী ইয়াও
বাওলাই (Yao Baolai) স্যার আমাদের কয়েকজন শ্রোতার সাথে দেখা করবেন বলেন। আর এ সুযোগ করিয়ে দেন সিআরআই-এর বেশ পুরনো ও অভিজ্ঞ শ্রোতা, এখনকার সিআরআই বাংলাদেশ মনিটর দিদারুল ইকবাল।
যেমন করে ফুলেরা হাসে
পাখিরা গায়
তারারা জাগে
পবন বয়
তেমনি সেদিন আমার হৃদয় ভরে উঠেছিলো
এক সুখকর আনন্দময় শান্ত পরিবেশের মিষ্টি হাওয়ায়।
মি: ইয়াও
বাওলাই ছিলেন অত্যন্ত শান্ত, ভদ্র ও একজন অমায়িক লোক। তিনি আমাদের স্বাগত জানিয়ে ভিতরে নিয়ে গেলেন, আপ্যায়ন করালেন, সিআরআই ও চীনকে নিয়ে জমিয়ে গল্পে মেতে উঠলেন। এরপর তিনি দিদারুল ইকবাল, আমাকে, ক্লাবের অন্য সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ও মাহাবুবুল আলম সেলিম সহ চার জনকে চীনা সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সুন্দর সুন্দর দামী কিছু উপহার দিলেন। এখানে বলে রাখা ভালো মি. ইয়াও
বাওলাই যদিও চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা ছিলেন কিন্তু তিনি সিআরআই এবং সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশেরও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। শ্রোতাদের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। তিনি সিআরআই-এর শ্রোতাদের অনেক বেশি পছন্দ করতেন, ভালোবাসতেন। সিআরআই-কে নিয়ে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন হলে দূতাবাস থেকে তিনিই সবার আগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন। তার সাথে আমার আরো একাধিকবার দেখা হয়েছে, সাক্ষাত হয়েছে দূতাবাসে এবং অন্য অনুষ্ঠানে। এই প্রিয় বন্ধুটি বহুদিন আগে অবসরে গেছেন। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন তা আমার জানা নেই। কিন্তু তাকে আমরা এখনো মিস করি, তার শূন্যতা অনুভব করি। তিনি এখন যেখানেই থাকুন না কেন সেখানে যাতে ভালো থাকেন, সুস্থ্য থাকের তা হৃদয়ের গভীর থেকে দোয়া করি। ২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি আমাকে যে উপহার দিয়েছিলেন তা সিআরআই-এর আরো অন্যান্য উপহারের সাথে আমাদের বাড়ীতে এখনো সু-সজ্জিত রয়েছে। ঐ উপহারের দিকে যখনি নজর পড়ে ঠিক তখনি চোখের সামনে ভেসে উঠে তার ছবি। যা আদো ভুলার নয়! ইয়াও
বাওলাই এর সাথে আরো একাধিকবার দেখা হয়েছে আমার। এরমধ্যে আরো একটি উল্লেখযোগ্য দিন কাটিয়েছি তার সাথে। ২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে দিদারুল ইকবাল সিআরআই বাংলা বিভাগের প্রথম বাংলাদেশ মনিটর নির্বাচিত হলে ২০০৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তাকে আমরা আমাদের শ্রোতা ক্লাবের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেই। সেই সুবাধে চীনা দূতাবাসেই ইয়াও
বাওলাই তার নিজ হাতে দিদারুল ইকবালকে সংবর্ধনা ক্রেস্ট তুলে দেন। সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশের মহাসচিব জিল্লুর রহমান জিলু ভাই, চট্টগ্রামের মাহমুদ হায়দার জীবন, সাইফুল ইসলাম সুজন, শাহ মো: ইউনুছ আনছারী, ফরিদপুরের এম.এম.গোলাম সারোয়ার, কুষ্টিয়ার মনিরুজ্জামান মনির, গাজীপুরের শহীদুল কায়সার লিমন সহ আরো বেশ কয়েকজন শ্রোতা সেদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আমরা সবাই সেদিন দূতাবাসে বেশ আনন্দঘন সময় কাটিয়েছিলাম, সেই স্মৃতিগুলো এখনো মনে পড়লে চোখের সামনে জ্বল জ্বল করে উঠে। সেই সময়কার ছবিগুলো দেখলে মন আনন্দে, আবেগে আফ্লুত হয়ে উঠে।
এই চীন বেতার-কে নিয়ে দীর্ঘ শ্রোতা জীবনে কত যে মধুর স্মৃতি আছে যার দুই-একটি এখানে উল্লেখ না করলে নয়।
আমি বেতারে যাদের কন্ঠ মুগ্ধ হয়ে শুনি তাদের কারো সাথে তখনো আমার দেখা হয়নি। চীনা বন্ধুদের কন্ঠে ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে বাংলা কথা শুনে তাদেরকে বাস্তবে দেখার স্বাদ যাগতো মনে। তীব্র আকাঙ্খায় থাকতাম তারা দেখতে কেমন, কিভাবে কথা বলে, কী খায়, কিভাবে তাদের দেখা পাবো? এমনি একদিন সেই সুযোগ এসে গেলো। ২০০৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিআরআই লিসনার্স ক্লাব অব বাংলাদেশ ঢাকায় রাজারবাগে অবস্থিত হোটেল আশরাফীতে সিআরআই শ্রোতা সম্মেলন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ঐ অনুষ্ঠানে আমাকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে চীন বেতারের কর্মী মিস ওয়াং তান হুং (রুবি) এবং চীনা দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কাউন্সেলর Liu Sanzhen অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রুবি আপুকে বাস্তবে নিজের চোখে দেখে সেদিন আমি সত্যি অনেক খুশি হয়েছিলাম। সিআরআই-এর কোন কর্মীর সাথে সেটিই ছিলো আমার প্রথম সাক্ষাৎ। আজ রুবি আপু অনেক পরিপক্ক হয়েছেন, এখন অনেক ভালো বাংলা বলতে পারেন। ২০১৩ সালে চীন ভ্রমণের সময় তার সাথে আমার দ্বিতীয়বার দেখা হয়েছে সিআরআই ভবনে।
২০০৭ সালে ঢাকায় বিয়াম মিলনায়তনে সিআরআই শ্রোতা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে যোগ দিতে ঐসময় চীন থেকে আসেন সিআরআই বাংলা বিভাগের পরিচালক মাদাম ইউ কোয়াং ইউয়ে (আনন্দী)। বেতারের প্রধানের সাথে ঐটিই ছিলো আমার প্রথম দেখা। সেদিন অনুষ্ঠানে চীনের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মি. চং ছিংদিয়েন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে আসেন সিআরআই-এর উপ-মহাপরিচালক ওয়াং ইয়ুন ফোং এবং বাংলা বিভাগের প্রধান মাদাম ইউ কোয়াং ইউয়ে (আনন্দী)। ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা গুলশানের গোল্ডেন রাইস রেস্টুরেন্টে আমরা বিশেষ এক আলোচনা সভা ও মধ্যাহ্ন ভোজে অংশগ্রহণ করি। ঐসময় বাংলা বিভাগের কর্মী বর্তমান উপ-পরিচালক ছাও ইয়ান হুয়া (সুবর্ণা), তৎকালীন বাংলা বিভাগের বিশেষজ্ঞ আবাম ছালাউদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদদাতা মাহমুদ হাশিম, সিআরআই লিসনার্স ক্লাবের মহাসচিব জিল্লু ভাই, ওসমান গণী ভাই, দিদারুল ইকবাল সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন অধ্যাপকও উপস্থিত ছিলেন। আমাদের ক্লাবের পক্ষ থেকে সিআরআই-এর উপ-মহাপরিচালক ওয়াং ইয়ুন ফোং-কে আমার নিজের হাতের তৈরী নকশী করা একটি ওয়ালমেট উপহার দিয়েছিলাম। তিনি আমার হাতের কাজের প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান। সিআরআই-এর সর্বোচ্চ কোন নেতার সাথে সেটিই ছিলো আমার প্রথম দেখা। এরপর তিনি দিদারুল ইকবাল ও আমাকে দুটি মূল্যবান উপহার দেন। বাংলা বিভাগের সুবর্ণা আপুর সাথে্ও ঐ অনুষ্ঠানে আমার প্রথম দেখা হয়।
সিআরআই প্রতিনিধি দল মূলত ঐসময় বাংলাদেশ সফরে আসেন বাংলা ভাষার এফ.এম অনুষ্ঠান প্রচার সম্পর্কে বাংলাদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক এবং বেতার ও তথ্যমন্ত্রণলায়ের কর্মকর্তাদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করতে। এই ফাঁকে তারা সিআরআই শ্রোতা ক্লাবের নের্তৃবৃন্দের সাথেও সাক্ষাৎ করে নেন এবং সিআরআই-কে নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান। এভাবে কেটে যায় এক বছরেরও বেশি সময়। অবশেষে ২০১০ সালের ১ নভেম্বর থেকে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে শ্রোতাদের কাঙ্খিত এফ.এম অনুষ্ঠান ইংরেজী ও বাংলায় ১ ঘন্টা করে মোট ২ ঘন্টায় সম্প্রচার শুরু হয় বিকেল ৫:৩০ থেকে ৬:৩০ এবং ৬:৩০ থেকে ৭:৩০ পর্যন্ত যথাক্রমে এফ.এম- ১০৩.২ ও ১০৫.৪ মেগাহার্জে। যা বর্তমানে ঢাকা এফ.এম- ১০২ ও চট্টগ্রাম এফ.এম- ৯০ মেগাহার্জে সকাল ৬:০০টা থেকে রাত ১২:০০টা পর্যন্ত মোট ১৮ ঘন্টা সম্প্রচারিত হচ্ছে।
২০১০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রথমবারের মতো মেলায় অংশ নিয়ে স্টল দেয় সিআরআই-এসএমএফ কনফুসিয়াস ক্লাসরুম। বইমেলায় এই স্টল ছিলো সিআরআই-এর শ্রোতাদের একটি অন্যতম আড্ডার স্থান। আমরা মাস জুড়ে সিআরআই স্টলে বিকেলে আড্ডায় মিলিত হতাম এবং মেলায় আগত দর্শকদের সিআরআই বাংলা অনুষ্ঠান রেডিও এবং এফএম-এ শুনতে এছাড়া ওয়েবসাইট ভিজিট করতে উৎসাহিত করতাম, কনফুসিয়াস ক্লাসরুমে চীনা ভাষা শিক্ষা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিতাম। স্টলে রেডিও এবং মোবাইল ফোনে অনুষ্ঠান প্রচারের ব্যবস্থা রেখেছিলাম আমরা। এছাড়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে সিআরআই বাংলা অনলাইন সাইটও ব্রাউজিং করে দেখানো হতো। মহিউদ্দিন তাহের ভাই, ইয়াং ওয়েই মিং (স্বর্ণা) ও ছাও ইয়ান হুয়া (সুবর্ণা) আপু, মাহমুদ হাশিম ভাই, দিদারুল ইকবাল, শহীদুল কায়সার লিমন এদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ ও তথ্য সরবরাহ দূরদূরান্ত থেকে আগত শ্রোতাদের মুগ্ধ করতো। আমরা সম্মিলিত ভাবে সিআরআই-এর প্রচারনায় কাজ করেছিলাম। এর ফলে সিআরআই আমার আপন থেকে আরো আপন হয়ে উঠে। ২০১১ সালের বই মেলায়ও আমরা একি ভাবে সিআরআই-এর প্রচারনায় কাজ করেছি।
এভাবে আমি সিআরআই-এর আমন্ত্রণে বিভিন্ন শ্রোতা সম্মেলন, চলচ্চিত্র উৎসব, বসন্ত উৎসব, কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎসব, আলোকচিত্র প্রদর্শনী সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাই এবং সেখানে আরোও অনেক শ্রোতার সাথে পরিচিত হই এবং কিছু কিছু শ্রোতার সাথে আমাদের খুব ভালো বন্ধুত্ব হয় যার পরিপ্রেক্ষীতে কারো বাড়ীতে কারো জন্মদিন, ঈদ, বিয়ে এমনকী ঘরোয়া ছোট খাট অনুষ্ঠানেও আমরা একত্রীত হই, খাওয়া-দাওয়া করি এবং প্রাণ খুলে সিআরআই গল্প নিয়ে মেতে থাকি। এই বন্ধন সিআরআই-কে ভালোবাসার বন্ধন।
প্রকৃতির মত স্বচ্ছল
বাতাসের মত শীতল
সাগরের মত অতল
ঝর্ণার মত চঞ্চল
ভালোবাসার সিআরআই-এর ছায়াতল।
গল্পের বাকি অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন.......>>>>>>>>
চীন
আন্তর্জাতিক বেতার বাংলা
বিভাগের ৫০ বছর
পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ
স্মৃতিচারণ:
“আমার
স্বপ্নময় সুখের সংসার
ঘড়ে দিয়েছে CRI –তাছলিমা আক্তার লিমা”
এই গল্প সম্পর্কিত ছবি দেখতে এই অংশে ক্লিক করুন.......
No comments:
Post a Comment